নাগরিকের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্ব যদি রাষ্ট্র পালন না করে, যদি সেই ব্যর্থতা নাগরিকের জীবন কেড়ে নেয়, তা হলে কি সেটাও হিংসাই হল না? লিখছেন বোলান গঙ্গোপাধ্যায়
সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা নতুন করে আর কোনও আঘাত দেয় না৷ সকালে খবরের কাগজ খুলে বা নিউজ চ্যানেলে চোখ রাখলেই, প্রতিদিন একাধিক ধর্ষণের খবর৷ ইদানীং তাতে যোগ হয়েছে খুন৷ ধর্ষক আর কোনও চিহ্ন রাখতে চায় না বলেই হোক, বা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই হোক, মেয়েটিকে খুন না করে শান্ত হচ্ছে না৷
এ সব জানি৷ তার পরও কামদুনির ঘটনায় বাক্যরহিত হয়ে যাই৷ বিবরণ যা পড়লাম ও শুনলাম তাতে মনে হল, অপরাজিতার মৃতদেহকে গণধর্ষণ করা হয়েছে৷ এত নিষ্ঠুরতা কেন? এমন কি হতে পারে, আর পাঁচজন যেখানে দারিদ্রের কাছে, নানা প্রতিবন্ধকতার কাছে মাথা নুইয়ে ফেলে, সেখানে অপরাজিতা মাথা ও নৈতিকতাকে উঁচু রেখে পুরুষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া গণ্ডির বাইরে গিয়ে পুরুষের জগতে পা রাখছিল বলেই, তার জন্য এই শাস্তি বরাদ্দ?
বাক্যরহিত হওয়ার পরও কিছু বাকি ছিল৷ সেটুকু পূরণ হল কামদুনিতে যাওয়ার পর৷ রাজারহাট থেকে সামান্য দূরত্বে, বারাসতের মতো জমজমাট জায়গার সঙ্গে একই থানার মধ্যে থেকেও, কামদুনি অনেকটা দুয়োরানির মতো৷ সেখানে মানুষ যেন 'নেই' রাজ্যের বাসিন্দা৷ আলো নেই, যানবাহন নেই, টিউবওয়েলও তেমন চোখে পড়ল না৷ পিচ বাঁধানো রাস্তা ছেড়ে, গ্রামে ঢুকতে গেলে, রাস্তার অবস্থাও ভালো না৷ এই 'নেই' রাজ্যের মেয়ে, অপরাজিতা জন-মজুর বাবার ঘরের সব 'নেই'-কে অগ্রাহ্য করেই এগিয়ে চলছিল৷ তাঁদের এক ইটের গাঁথনির টালির বাড়িতে এখনও ছড়ানো আছে বই-পত্র৷ এই মাত্র যেন পরীক্ষা দিতে গিয়েছে৷ ফিরে এসে আবার পরের দিনের জন্য তৈরি হবে৷ আমার মনে পড়ে গেল, আশির দশকে একটা স্লোগান খুব পরিচিতি পেয়েছিল: 'ভুখা মানুষ ধরো বই/ওটা তোমার হাতিয়ার'৷
অপরাজিতা এই হাতিয়ার নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল৷ মাঝপথে সেই লড়াই যে থেমে গেল- এর দায় বা দায়িত্ব কার? রাষ্ট্র কি অস্বীকার করতে পারে এই দায়িত্ব?
অপরাজিতার দাদা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর বোনের উপর ঘটে যাওয়া এই অমানবিক হিংসাকে কি রাষ্ট্রীয় হিংসা বলা যায়?সাধারণভাবে আমরা যাকে রাষ্ট্রীয় হিংসা বলি, তা হল রাষ্ট্র সরাসরি যে হিংসা ঘটায়৷ যেমন ঘটেছিল নন্দীগ্রামে৷ নিরস্ত্র জনতার উপর গুলি চালাতে চালাতে পুলিশ গ্রামে ঢুকেছিল৷ কিন্তু এই সাধারণ সংজ্ঞার পরও থেকে যায় আরও কিছু প্রশ্ন৷ দায়িত্বের প্রশ্ন৷ নাগরিকের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার দায়ের প্রশ্ন৷ যদি রাষ্ট্র সে দায়িত্ব পালন না করে? আর সেই ব্যর্থতা নাগরিকের জীবন কেড়ে নেয়? তা হলে কি সেটাও হিংসাই হল না? কখনও কখনও নীরবতার রাজনীতি যেমন সরব রাজনীতির চেয়েও বেশি কথা বলে তেমনই কখনও কখনও রাষ্ট্র যখন দায়িত্বের প্রশ্নে হাত তুলে ফেলে, তখন সেটাও হয়ে ওঠে হিংসা৷
আমরা কামদুনি যাওয়ার আগে এপিডিআর-এর কয়েক জন প্রতিনিধি সেখানে গিয়েছিলেন৷ শোনা গিয়েছে, তাঁদের পুলিশ আধিকারিক নাকি বলেছেন যে তিনি আগে কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারবেন না৷ ঘটনা ঘটে গেলে, আসবেন৷
অর্থাত্ নাগরিকের সুরক্ষার যে দায়িত্ব রাষ্ট্রের প্রধান এবং প্রথম দায়িত্ব- সেই দায়িত্ব অস্বীকার করছে রাষ্ট্র৷ অঞ্চলে গত পঁচিশ-তিরিশ বছর ধরে চোলাইয়ের রমরমা ব্যবসা চলছে৷ ছড়ানো ছিটানো লোকালয়৷ সেখানে মাঝে পাট খেত আর ভেড়ি৷ ক্লাস এইট পর্যন্ত একটি শিক্ষাকেন্দ্র আছে৷ নাইনে কোথাও ভর্তি হওয়া মুশকিল বলে, মেয়েদের ক্লাস ফাইভ-সিক্স (অর্থাত্ এগারো-বারো বছর বয়স) থেকেই পাঁচ-ছ'মাইল গড়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হয়৷ যে রাস্তা দিয়ে যেতে হয় সেই রাস্তার ধারে সকাল থেকেই চোলাই মদের ব্যবসা চলে৷ গোটা অঞ্চলটাই সমাজবিরোধীদের দখলে৷ দু'মাইল দূরে ফাঁড়ি আছে একটা৷ কিন্তু সেখানে ঢাল-তরোয়াল ছাড়াই নিধিরামেরা কখনও থাকেন, কখনও থাকেন না৷
এই যে একটা অরাজকতা যাকে বলে 'ভগবানের নামে ছেড়ে দেওয়া' অঞ্চল- সেই অঞ্চলের দায়িত্ব কার? সমাজ বিরোধীরা যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে- তার দায়িত্ব কার? বেলা আড়াইটের সময় প্রকাশ্য দিবালোকে একটি কুড়ি বছরের মেয়েকে টেনে নিয়ে যাওয়ার মতো যে পরিবেশ এবং পরিপার্শ্ব তৈরি হয়েছে- এর দায়িত্ব কার?
আমি জানি, এর উত্তরে বলা হবে, রাষ্ট্র তো আর পুলিশ দিয়ে ধর্ষণ করায়নি৷ তা হলে রাষ্ট্র দায়িত্ব নেবে কেন? অনুন্নয়নই কারণ৷ প্রশ্ন হল, এই অনুন্নয়ন কার স্বার্থে? কেন একটি গোটা অঞ্চলকে এমন অনালোকিত, যানবাহনশূন্য করে রাখা হবে? যেখানে এই রাজ্যেরই রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় হ্যালোজেনের তলায় তলায় কেবল সৌন্দর্যায়নের জন্য ত্রিফলা আলোর বিলাসিতা? এই বৈষম্যের কারণ কী? উত্তরই বা কে দেবে?
যে কোনও সংজ্ঞা তৈরি হয় সেই বিষয়ের সারাত্সারটুকুকে তুলে ধরার জন্য৷ তা অনড় ও অপরিবর্তনীয় কোনও চিরকালীন তত্ত্ব হতে পারে না৷ রাষ্ট্র যখন শিশু থাকে, তার আচরণ অনেকখানিই নাগরিক বন্ধু হয়ে থাকে৷ কিন্তু রাষ্ট্র যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন তার আচরণে সেই ব্যক্তির প্রকাশ নানা ভাবে ঘটে৷ নাগরিকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করাকেও তখন সে 'অধিকার' বলে মনে করে৷
এ কথা ঠিক যে অপরাজিতাকে ধর্ষণ করার জন্য কোনও বাইক বাহিনীকে পাঠায়নি রাষ্ট্র৷ যেমন পাঠানো হয়েছিল নন্দীগ্রামে বা দু'হাজার দুইয়ের গুজরাতে৷ তেমনই এ'কথাও ঠিক অপরাজিতার সুরক্ষার, নিরাপত্তার কোনও দায়িত্বও রাষ্ট্র নেয়নি৷ এই না-নেওয়া আসলে ধর্ষকের পক্ষে সুবিধা তৈরি করা৷ নাগরিকের এই দায়িত্ব রাষ্ট্র কোনও ভাবেই অস্বীকার করতে পারে না৷ সেইখানেই এই ধর্ষণ ও হত্যা আসলে রাষ্ট্রীয় হিংসারই প্রকাশ৷ সংজ্ঞাকে অপরিবর্তিত থাকতে হলে, রাষ্ট্রের চেহারাকেও অপরিবর্তিত থাকতে হয়৷ রাষ্ট্র যখন নিজের চেহারার বা আচরণের পরিবর্তন ঘটায়, তখন সংজ্ঞাকেও পরিবর্তিত হতে হবে বইকি৷
সাম্প্রতিক পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণের ঘটনা নতুন করে আর কোনও আঘাত দেয় না৷ সকালে খবরের কাগজ খুলে বা নিউজ চ্যানেলে চোখ রাখলেই, প্রতিদিন একাধিক ধর্ষণের খবর৷ ইদানীং তাতে যোগ হয়েছে খুন৷ ধর্ষক আর কোনও চিহ্ন রাখতে চায় না বলেই হোক, বা প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই হোক, মেয়েটিকে খুন না করে শান্ত হচ্ছে না৷
এ সব জানি৷ তার পরও কামদুনির ঘটনায় বাক্যরহিত হয়ে যাই৷ বিবরণ যা পড়লাম ও শুনলাম তাতে মনে হল, অপরাজিতার মৃতদেহকে গণধর্ষণ করা হয়েছে৷ এত নিষ্ঠুরতা কেন? এমন কি হতে পারে, আর পাঁচজন যেখানে দারিদ্রের কাছে, নানা প্রতিবন্ধকতার কাছে মাথা নুইয়ে ফেলে, সেখানে অপরাজিতা মাথা ও নৈতিকতাকে উঁচু রেখে পুরুষের নির্দিষ্ট করে দেওয়া গণ্ডির বাইরে গিয়ে পুরুষের জগতে পা রাখছিল বলেই, তার জন্য এই শাস্তি বরাদ্দ?
বাক্যরহিত হওয়ার পরও কিছু বাকি ছিল৷ সেটুকু পূরণ হল কামদুনিতে যাওয়ার পর৷ রাজারহাট থেকে সামান্য দূরত্বে, বারাসতের মতো জমজমাট জায়গার সঙ্গে একই থানার মধ্যে থেকেও, কামদুনি অনেকটা দুয়োরানির মতো৷ সেখানে মানুষ যেন 'নেই' রাজ্যের বাসিন্দা৷ আলো নেই, যানবাহন নেই, টিউবওয়েলও তেমন চোখে পড়ল না৷ পিচ বাঁধানো রাস্তা ছেড়ে, গ্রামে ঢুকতে গেলে, রাস্তার অবস্থাও ভালো না৷ এই 'নেই' রাজ্যের মেয়ে, অপরাজিতা জন-মজুর বাবার ঘরের সব 'নেই'-কে অগ্রাহ্য করেই এগিয়ে চলছিল৷ তাঁদের এক ইটের গাঁথনির টালির বাড়িতে এখনও ছড়ানো আছে বই-পত্র৷ এই মাত্র যেন পরীক্ষা দিতে গিয়েছে৷ ফিরে এসে আবার পরের দিনের জন্য তৈরি হবে৷ আমার মনে পড়ে গেল, আশির দশকে একটা স্লোগান খুব পরিচিতি পেয়েছিল: 'ভুখা মানুষ ধরো বই/ওটা তোমার হাতিয়ার'৷
অপরাজিতা এই হাতিয়ার নিয়ে লড়াইয়ে নেমেছিল৷ মাঝপথে সেই লড়াই যে থেমে গেল- এর দায় বা দায়িত্ব কার? রাষ্ট্র কি অস্বীকার করতে পারে এই দায়িত্ব?
অপরাজিতার দাদা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন, তাঁর বোনের উপর ঘটে যাওয়া এই অমানবিক হিংসাকে কি রাষ্ট্রীয় হিংসা বলা যায়?সাধারণভাবে আমরা যাকে রাষ্ট্রীয় হিংসা বলি, তা হল রাষ্ট্র সরাসরি যে হিংসা ঘটায়৷ যেমন ঘটেছিল নন্দীগ্রামে৷ নিরস্ত্র জনতার উপর গুলি চালাতে চালাতে পুলিশ গ্রামে ঢুকেছিল৷ কিন্তু এই সাধারণ সংজ্ঞার পরও থেকে যায় আরও কিছু প্রশ্ন৷ দায়িত্বের প্রশ্ন৷ নাগরিকের জীবন ও সম্পত্তি রক্ষার দায়ের প্রশ্ন৷ যদি রাষ্ট্র সে দায়িত্ব পালন না করে? আর সেই ব্যর্থতা নাগরিকের জীবন কেড়ে নেয়? তা হলে কি সেটাও হিংসাই হল না? কখনও কখনও নীরবতার রাজনীতি যেমন সরব রাজনীতির চেয়েও বেশি কথা বলে তেমনই কখনও কখনও রাষ্ট্র যখন দায়িত্বের প্রশ্নে হাত তুলে ফেলে, তখন সেটাও হয়ে ওঠে হিংসা৷
আমরা কামদুনি যাওয়ার আগে এপিডিআর-এর কয়েক জন প্রতিনিধি সেখানে গিয়েছিলেন৷ শোনা গিয়েছে, তাঁদের পুলিশ আধিকারিক নাকি বলেছেন যে তিনি আগে কোনও সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে পারবেন না৷ ঘটনা ঘটে গেলে, আসবেন৷
অর্থাত্ নাগরিকের সুরক্ষার যে দায়িত্ব রাষ্ট্রের প্রধান এবং প্রথম দায়িত্ব- সেই দায়িত্ব অস্বীকার করছে রাষ্ট্র৷ অঞ্চলে গত পঁচিশ-তিরিশ বছর ধরে চোলাইয়ের রমরমা ব্যবসা চলছে৷ ছড়ানো ছিটানো লোকালয়৷ সেখানে মাঝে পাট খেত আর ভেড়ি৷ ক্লাস এইট পর্যন্ত একটি শিক্ষাকেন্দ্র আছে৷ নাইনে কোথাও ভর্তি হওয়া মুশকিল বলে, মেয়েদের ক্লাস ফাইভ-সিক্স (অর্থাত্ এগারো-বারো বছর বয়স) থেকেই পাঁচ-ছ'মাইল গড়ে হেঁটে স্কুলে যেতে হয়৷ যে রাস্তা দিয়ে যেতে হয় সেই রাস্তার ধারে সকাল থেকেই চোলাই মদের ব্যবসা চলে৷ গোটা অঞ্চলটাই সমাজবিরোধীদের দখলে৷ দু'মাইল দূরে ফাঁড়ি আছে একটা৷ কিন্তু সেখানে ঢাল-তরোয়াল ছাড়াই নিধিরামেরা কখনও থাকেন, কখনও থাকেন না৷
এই যে একটা অরাজকতা যাকে বলে 'ভগবানের নামে ছেড়ে দেওয়া' অঞ্চল- সেই অঞ্চলের দায়িত্ব কার? সমাজ বিরোধীরা যে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করে রেখেছে- তার দায়িত্ব কার? বেলা আড়াইটের সময় প্রকাশ্য দিবালোকে একটি কুড়ি বছরের মেয়েকে টেনে নিয়ে যাওয়ার মতো যে পরিবেশ এবং পরিপার্শ্ব তৈরি হয়েছে- এর দায়িত্ব কার?
আমি জানি, এর উত্তরে বলা হবে, রাষ্ট্র তো আর পুলিশ দিয়ে ধর্ষণ করায়নি৷ তা হলে রাষ্ট্র দায়িত্ব নেবে কেন? অনুন্নয়নই কারণ৷ প্রশ্ন হল, এই অনুন্নয়ন কার স্বার্থে? কেন একটি গোটা অঞ্চলকে এমন অনালোকিত, যানবাহনশূন্য করে রাখা হবে? যেখানে এই রাজ্যেরই রাজধানীর রাস্তায় রাস্তায় হ্যালোজেনের তলায় তলায় কেবল সৌন্দর্যায়নের জন্য ত্রিফলা আলোর বিলাসিতা? এই বৈষম্যের কারণ কী? উত্তরই বা কে দেবে?
যে কোনও সংজ্ঞা তৈরি হয় সেই বিষয়ের সারাত্সারটুকুকে তুলে ধরার জন্য৷ তা অনড় ও অপরিবর্তনীয় কোনও চিরকালীন তত্ত্ব হতে পারে না৷ রাষ্ট্র যখন শিশু থাকে, তার আচরণ অনেকখানিই নাগরিক বন্ধু হয়ে থাকে৷ কিন্তু রাষ্ট্র যখন শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তখন তার আচরণে সেই ব্যক্তির প্রকাশ নানা ভাবে ঘটে৷ নাগরিকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করাকেও তখন সে 'অধিকার' বলে মনে করে৷
এ কথা ঠিক যে অপরাজিতাকে ধর্ষণ করার জন্য কোনও বাইক বাহিনীকে পাঠায়নি রাষ্ট্র৷ যেমন পাঠানো হয়েছিল নন্দীগ্রামে বা দু'হাজার দুইয়ের গুজরাতে৷ তেমনই এ'কথাও ঠিক অপরাজিতার সুরক্ষার, নিরাপত্তার কোনও দায়িত্বও রাষ্ট্র নেয়নি৷ এই না-নেওয়া আসলে ধর্ষকের পক্ষে সুবিধা তৈরি করা৷ নাগরিকের এই দায়িত্ব রাষ্ট্র কোনও ভাবেই অস্বীকার করতে পারে না৷ সেইখানেই এই ধর্ষণ ও হত্যা আসলে রাষ্ট্রীয় হিংসারই প্রকাশ৷ সংজ্ঞাকে অপরিবর্তিত থাকতে হলে, রাষ্ট্রের চেহারাকেও অপরিবর্তিত থাকতে হয়৷ রাষ্ট্র যখন নিজের চেহারার বা আচরণের পরিবর্তন ঘটায়, তখন সংজ্ঞাকেও পরিবর্তিত হতে হবে বইকি৷
No comments:
Post a Comment