Palash Biswas On Unique Identity No1.mpg

Unique Identity No2

Please send the LINK to your Addresslist and send me every update, event, development,documents and FEEDBACK . just mail to palashbiswaskl@gmail.com

Website templates

Zia clarifies his timing of declaration of independence

What Mujib Said

Jyoti basu is DEAD

Jyoti Basu: The pragmatist

Dr.B.R. Ambedkar

Memories of Another Day

Memories of Another Day
While my Parents Pulin Babu and basanti Devi were living

"The Day India Burned"--A Documentary On Partition Part-1/9

Partition

Partition of India - refugees displaced by the partition

Tuesday, September 30, 2014

মূল্যবোধের অবক্ষয় ও বাম রাজনীতি ।। অরূপ বৈশ্য ।।


Sushanta Kar

11:30am Oct 1

কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে এ পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্ররা জমায়েত হতে শুরু করলে মিছিল বন্ধ করে দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রবেশের পক্ষে কলেজ অধ্যক্ষ সায় দেননি। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ পার হতেই মিছিলের সামনে ব্যারিক্যাড তৈরি করে পুলিশ। রাস্তা অবরূদ্ধ হয়ে যায়, ছাত্ররা রাস্তায় বসে পড়ে। সামনের সারিতে থাকা ছাত্ররা ব্যারিক্যাড ভাঙার প্রচেষ্টা করে। সেসময়ের উঁচুপদের এক পুলিশকর্তা বর্তমান লেখকের সোয়েটারের কলার ধরে টানলে বর্তমানে প্রয়াত আমাদের এক সহপাঠী যশোবন্ত দত্ত আমাকে জাপটে ধরে। পুলিশ দুজনকেই টেনে হেঁচড়ে ভ্যানে উঠিয়ে সদর থানার নিয়ে গিয়ে লক-আপে ঢুকিয়ে দেয়। সন্ধ্যার সময় আমাদের দুজনকে সসম্মানে নিয়ে যাওয়া হয় সার্কিট হাউসের একটি ঘরে। এই ঘরের বৃহৎ আকৃতির এক টেবিলের একদিকে বসে ছিলেন সবার পরিচিত বিশিষ্ট অসমীয়া বুদ্ধিজীবী ও আমাদের অধ্যক্ষ নির্মল কুমার চোধুরী ও অন্যপাশে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। টেবিলের বাকী চেয়ারে আমাদের দুজনকে বসতে বলা হয়।...অরূপ বৈশ্যের (Arup Baisya) লেখা বাকিটা পড়ুন...


       ।। অরূপ বৈশ্য ।।


(এই লেখাটি যাদবপুর ছাত্র আন্দোলনের সমর্থনে শিলচরে ছাত্র মিছিলের দিনেই মিছিলের প্রতিক্রিয়ায় লেখা)


যাদবপুরে পুলিশ


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একপ্রস্ত কুনাট্য হয়ে গেল। এখান থেকে ছাত্র রাজনীতি নিয়েই শুধুমাত্র নতুন প্রশ্ন উত্থাপিত হলো না, উন্মোচিত হলো সর্বস্তরে মূল্যবোধের অবক্ষয়ের বাস্তব চেহারা। যাদবপুরের উপাচার্য ছাত্র-বিক্ষোভকে প্রশমিত করতে নির্ভর করলেন পাশবিক রাষ্ট্রশক্তির উপর। বর্তমান লেখকের ছাত্র-রাজনীতির কিছু ঘটনার উল্লেখ শিক্ষাক্ষেত্রের শিক্ষক প্রশাসকের  মূল্যবোধের তূলনামূলক বিচার করার সহায়ক হতে পারে।


উত্তরণকালীন পর্যায়


যে ঘটনার উল্লেখ এখানে করা হচ্ছে সেই ঘটনার সময়কাল আশির দশক। অর্থাৎ এটা এমন এক সময় যখন সত্তরের দশকের বিদ্রোহী ছাত্র রাজনীতি ম্রিয়মাণ হয়ে আসছে এবং উদার-অর্থনীতির জীয়ন কাঠির ছোঁয়ায় ক্যারিয়ার-সর্বস্ব প্রতিষ্ঠার দিকে ছাত্র-সমাজ আকৃষ্ঠ হয়ে পড়ছে। স্বাভাবিকভাবেই এই উত্তরণকালীন পর্যায়ে এমন কিছু সংখ্য্যক ছাত্র ছিল যারা সত্তরের বিদ্রোহী সত্তাকে বহন করে চলেছিল। বর্তমান লেখক এই বিদ্রোহী-চেতনারই একজন বাহক। এভাবে বাহক হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে জ্ঞানচর্চার অনেক ত্রুটি ও দুর্বলতা ছিল কিনা এ প্রশ্ন উঠতেই পারে এবং এধরনের প্রশ্ন বর্তমান লেখককেও ভাবিত করে। কিন্তু এই বহমানতার মধ্যে যে একধরনের মানবিক হৃদয়বৃত্তি ছিল তা অনস্বীকার্য। এই হৃদয়বৃত্তি ছাড়া মানব সমাজ মানবিক হয়ে উঠার ঈপ্সিত লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যেত পারে না। মানব সভ্যতার বিকাশের জন্য এটাকে একমাত্র বিশেষত্ব হিসেবে ধরে নিলে নিশ্চয়ই ভুল হবে, কিন্তু এটা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় সামাজিক বিশেষত্ব। যারা মানব সমাজের স্বার্থে ভাড়াটে সৈন্য হিসেবে নয়, স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জান বাজি রেখে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে চান তাঁরা নিশ্চিতভাবে মহান। কিন্তু যুদ্ধ কী, কার জন্য, কাদের স্বার্থে - সেই বুদ্ধিবৃত্তিগত চর্চা ছাড়া বিভিন্ন অংশগ্রহণের মধ্যে পার্থক্যরেখা টানা যায় না। উঁচুদরের পদার্থবিদ হওয়ার ক্ষমতাসম্পন্ন ছাত্র কডওয়েল যখন মাত্র পনেরো বছর বয়সে স্কুল ছেড়ে দিয়ে প্রথমে সাংবাদিক, কবিতা-সংস্কৃতি-পদার্থবিদ্যার লেখক হয়ে উঠেন ও পরে ফ্যাসিবিরোধী যুদ্ধে কম্যুনিস্ট সৈনিক হিসেবে অল্প বয়সেই আত্মবলিদান করেন, তাঁর প্রতি সম্মানে আমাদের মাথা হেঁট হয়ে যায়। যাইহউক, প্রারম্ভেই যে উদাহরণের মাধ্যমে সময়ের বিভাজনের সাথে মূল্যবোধের পার্থক্যরেখার কথা উল্লেখ করেছি সেখানে ফিরে আসা যাক।


সময়ের সাথে মূল্যবোধের পার্থক্য


যে কোন কারণেই হোক দুই বছরের সিনিয়র প্রার্থীকে পরাজিত করে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র ইউনিয়নের সর্বোচ্চ পদে নির্বাচিত হই। ব্যক্তিগতভাবে পরীক্ষা ও সিলেবাসের পাঠের প্রতি অনীহা থাকা সত্ত্বেও সময়মত পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে ধর্মঘটে আগসারির ভূমিকা নিতে ছাত্র-রাজনীতির মূল্যবোধই বাধ্য করে। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকায় পরীক্ষার সময়সূচী, পাঠ্যসূচী, প্রশ্নপত্র তৈরি ইত্যাদি কোন বিষয়েই শিলচর রিজিওন্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের বিশেষ কোন ভূমিকা ছিল না। তাই আন্দোলনই ছিল একমাত্র হাতিয়ার এবং দাবি আদায়ের জন্য এ আন্দোলন অনেক দূর গড়াত। সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় তদানীন্তন শিক্ষামন্ত্রীর শিলচর সফরসূচী উপলক্ষে সার্কিট-হাউস অব্দি মিছিল করে যাওয়া হবে। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদেরকে এ পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা করা হয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ছাত্ররা জমায়েত হতে শুরু করলে মিছিল বন্ধ করে দেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে প্রবেশের পক্ষে কলেজ অধ্যক্ষ সায় দেননি। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ পার হতেই মিছিলের সামনে ব্যারিক্যাড তৈরি করে পুলিশ। রাস্তা অবরূদ্ধ হয়ে যায়, ছাত্ররা রাস্তায় বসে পড়ে। সামনের সারিতে থাকা ছাত্ররা ব্যারিক্যাড ভাঙার প্রচেষ্টা করে। সেসময়ের উঁচুপদের এক পুলিশকর্তা বর্তমান লেখকের সোয়েটারের কলার ধরে টানলে বর্তমানে প্রয়াত আমাদের এক সহপাঠী যশোবন্ত দত্ত আমাকে জাপটে ধরে। পুলিশ দুজনকেই টেনে হেঁচড়ে ভ্যানে উঠিয়ে সদর থানার নিয়ে গিয়ে লক-আপে ঢুকিয়ে দেয়। সন্ধ্যার সময় আমাদের দুজনকে সসম্মানে নিয়ে যাওয়া হয় সার্কিট হাউসের একটি ঘরে। এই ঘরের বৃহৎ আকৃতির এক টেবিলের একদিকে বসে ছিলেন সবার পরিচিত বিশিষ্ট অসমীয়া বুদ্ধিজীবী ও আমাদের অধ্যক্ষ নির্মল কুমার চোধুরী ও অন্যপাশে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী। টেবিলের বাকী চেয়ারে আমাদের দুজনকে বসতে বলা হয়। পুলিশের ভূমিকার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ছিন্নভিন্ন হয়ে যাওয়া আমার প্রিয় সোয়েটার (লণ্ডন-নিবাসী আমার এক দাদা আমাকে এটি উপহার দিয়েছিল) টেবিলের উপর রাখি। আলোচনা শেষে আমরা আবার হোষ্টেলে ফিরে যাই এবং পরদিন থেকে আন্দোলন স্থগিত হয়ে যায়। আমাদের অধ্যক্ষ তাঁর নিজের ভূমিকার মাধ্যমেই ছাত্রদের সমীহ আদায় করে নেন, তারজন্য কোন নৈতিক শিক্ষার পাঠ কিংবা নিয়মের শেকল তৈরি করার প্রয়োজন পড়েনি। সত্তর দশকের শেকল ভাঙার সংস্কৃতির প্রভাব আশির প্রথম ভাগেও বিদ্যমান ছিল, তাই কোন শেকল তৈরির প্রচেষ্টাকে অঙ্কুরেই বিনাশ করে দেওয়ার জন্য ছাত্ররা প্রস্তুত ছিল। আশির দশক এমন এক সময় যখন ছাত্র-আন্দোলন, ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক, শিক্ষকের ভূমিকা সবকিছুতেই একটা বিপরীত যাত্রা শুরু হয়ে গেছে, এটা এমন পর্যায় যখন ন্যায় প্রতিষ্ঠার ও বৃহদের চিন্তা এবং যেনতেনপ্রকারেণ তথাকথিত উন্নতি ও ক্ষমতা প্রাপ্তির চিন্তার টানাপোড়েনে দ্বিতীয়টির বিজয় পতাকা বাস্তবের মাটিতে প্রোথিত হতে চলেছে।


বামপন্থীদের অবস্থান


ন্যায়সঙ্গত ছাত্র আন্দোলনে বরাবরই বামপন্থীদের এক সদর্থক ভূমিকা ছিল। ব্যক্তি, গোষ্ঠী, আত্মীয়-পরিজন বা দলীয় সংকীর্ণতার উর্ধে উঠে বৃহদের স্বার্থে ভাবনা ও কাজ করার অনুপ্রেরণাই ছিল এই ভূমিকার অন্তর্বস্তু। কিন্তু বামেদের এই আদর্শচ্যুতির চরম প্রকাশ ঘটতে শুরু করে আশির দশক থেকে যখন সংকীর্ণ গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রবণতা প্রকট হয়ে দেখা দিতে আরম্ভ করে। এর প্রভাব পরে সর্বত্র। এই বিচ্যুতির নগ্ন ও বিভৎস রূপে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেন তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ তৃণমূল কংগ্রেসের উত্থান ও বামেদের পিছু হঠার যাত্রা প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার মধ্যে। আমাদের এওঞ্চলেও আশির দশকের বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে, এমনকি ছিয়াশির ভাষা আন্দোলনেও বিভিন্ন বামপন্থী সংগঠনের সংকীর্ণতার নজির রয়েছে। এই বিপরীত যাত্রা কোন আকস্মিক ঘটনা নয়। এর ঐতিহাসিক ও আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা রয়েছে। এই প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করা এই নিবন্ধের উদ্দেশ্য না হলেও কিছু প্রাসঙ্গিক কথা এখানে উল্লেখ করা জরুরি। পশ্চিমবঙ্গের টালমাটাল সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে যে বাঙালি-মার্কসবাদ বা বাঙালি-বামপন্থার জন্ম হয় তা একদিকে পতোনোন্মুখ জমিদারি ব্যবস্থা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে ব্রিটিশ ত্রাতার প্রতি আনুগত্য ও ইংরেজি শিক্ষার মাধ্যমে আলোকপ্রাপ্ত ভদ্দরলোকদের মধ্যে একদিকে উপনিবেশিক মনস্তত্ব ও অন্যদিকে বিশ্ব-পুঁজিবাদের ছত্রছায়ায় বিকশিত নতুন শ্রেণিশক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ও ইউরোপীয় রেনেসাঁ প্রভাবিত যুক্তিবাদের সাথে মার্কসবাদ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। মতাদর্শ সবসময়ই ভ্রমাত্মক। সাম্যবাদী মতাদর্শের বহিরঙ্গে লুকিয়ে থাকতে পারে জাতি-ধর্ম-বর্ণগত বৈষম্য ও ঘৃণার মানসিকতা। পশ্চিমবাংলার বাঙালি সাম্যবাদের আড়ালে এই ঘৃণার মানসিকতা ও যুক্তিবাদী অবস্থান এই দুয়ের সংমিশ্রণ বরাবরই বজায় ছিল। তাই 'মার্কসবাদ একটি বিজ্ঞান' – এই যান্ত্রিক ঘোষণার আড়ালে স্তালিনীয় রাশিয়ার অন্ধ অনুগামী হওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রশ্ন দেখা দেয়নি। কারণ এই বিজ্ঞান চর্চায় দলীয় নেতারাই একমাত্র বিজ্ঞান শিক্ষক, মেহনতি জনগণ শুধুমাত্র এই শিক্ষকদের অন্ধ অনুগামী। জীবনের অভিজ্ঞতার সাথে বৌদ্ধিক চর্চার দ্বান্দ্বিক সংঘাতের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞান চর্চা ও সচতেনতা বিকশিত হওয়ার একমাত্র পথকে এভাবেই পরিহার করা হয়। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যেভাবে বৈজ্ঞানিক স্কিল ডেভেলাপম্যান্ট করা হয় বামেদের অনুসারিত পথ এর সাথে মিলে যায়। প্রাণশক্তি, সৃষ্টিশীলতা ও গণ-সচেতনতা বৃদ্ধির প্রশ্ন যেখানে উপেক্ষিত সেখানে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অনেক বেশি অগ্রণী ও কার্যকরী ভূমিকায় অবতীর্ণ থাকায় বামেদের অস্তিত্ত্ব বিপন্ন হয়ে উঠে।


মানব প্রজাতির স্বাভাবিক প্রবণতা


প্রতিটি প্রজাতির এক একটি স্বাভাবিক প্রবণতা থাকে। অসুস্থ বিপদাপন্ন পথচারীকে পাশ কাটিয়ে কোন দামী গাড়ির আরোহী দ্রুতগতিতে চলে যেতে পারেন এবং সেটাই আজকের জীবন বাস্তবতার প্রধান দিক। কিন্তু এই প্রধান দিকটি মানব প্রজাতির স্বাভাবিক প্রবণতা হতে পারে না। ভবিষ্যতের মধ্যে বেঁচে থাকার ইচ্ছার মধ্যেই লুকিয়ে আছে মানব প্রজাতির বেঁচে থাকার রহস্য। এই মানব সমাজ হিসেবে বেঁচে থাকার রহস্যকে আড়াল করে রাখে সম্পত্তি সম্পর্ক। এই সম্পত্তি সম্পর্কে সে দেখতে পায় তার সন্তানকে, তার পরিবার-পরিজনকে, তার গোষ্ঠী-সম্প্রদায় ইত্যাদিকে। সম্পত্তি মালিকানা তাকে মানব প্রজাতির সদস্য হিসেবে ভাবতে অপারগ করে তুলে। সেজন্যই মার্কস বলে ছিলেন যে একমাত্র সর্বহারা শ্রমিকশ্রেণিই সবার হয়ে কথা বলতে পারে, কারণ তার হারাবার কিছু নেই। কিন্তু সবার হয়ে কথা বলার প্রশ্নটি সচেতন হয়ে উঠার জটিল প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত, সেটা বামপন্থী শিক্ষকদের ট্রেনিং ক্যাম্পে নির্ধারিত হওয়ার বিষয় নয়। সেটা বাস্তব অন্যায় ও শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে নিরন্তর সংগ্রামের এক প্রক্রিয়া যে বাস্তবতায় মুনাফা, আরও মুনাফা ও মুষ্ঠিমেয়র হাতে সম্পদের কেন্দ্রীভবন পৃথিবীকে করে তুলছে মানুষের বাসের অনুপযোগী। প্রতিনিয়ত মনুষ্য সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ, প্রলয়, যুদ্ধ, হানাহানি, ধ্বংসের হাত থেকে কি মানব সমাজ বাঁচতে চাইবে না? নিশ্চয়ই চাইবে, কারণ এটাই মানব প্রজাতির সাধারণ প্রবৃত্তি এবং এখানেই আশার আলো এখনও জ্বলছে। মানব প্রজাতির বেঁচে থাকার এই রহস্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে বামেদের পুনরুত্থানের রহস্য। কারণ অসাম্য, লুণ্ঠন ও সম্পদের কেন্দ্রীভবনের বর্তমান ব্যবস্থার নীতিতে তথাকথিত উন্নয়ন মানেই যে ধ্বংস, বিপর্যয়, যুদ্ধ ও হানাহানি তা আর বুঝিয়ে বলার অপেক্ষা রাখে না। গুয়াহাটি- উত্তরাখন্ড-কাশ্মীরের বন্যা, গাজা-সিরিয়া-ইউক্রেনে মানব সংকট, চারিদিকে যুদ্ধ ও ফ্যাসিবাদী উত্থান কিংবা ইংলেণ্ড থেকে স্কটল্যাণ্ডের আলাদা হয়ে যাওয়ার বাসনা সবকিছুই বর্তমান ব্যবস্থায় মানব সমাজের সংকটকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। সুতরাং বামপন্থী সাম্যবাদের ঘুরে দাঁড়ানোর মধ্যেই মানব প্রজাতির মানবিক মূল্যবোধ নিয়ে বেঁচে থাকার একমাত্র গ্যারান্টি। কিন্তু এটা তখনই সম্ভব যখন বামপন্থীরা অতীত থেকে শিক্ষা নেবে, বাস্তব পরিস্থিতির বাস্তব ব্যাখ্যা করার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে আয়ত্ত করবে, কথা ও কাজের মধ্যে ব্যবধান ঘোচাতে সচেষ্ট হবে এবং সমস্ত দলীয় ও গোষ্ঠী সংকীর্ণতার উর্ধে উঠে মানব সমাজের অগ্রগতি ও মেহনতি মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির মানদণ্ডে সমস্ত ঘটনাকে বিচার করবে।


জীবনমুখী পরিবর্তন


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দোলনকে পরিস্থিতির আরেকটি বাঁক নেওয়ার সূচক হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। নিষ্ক্রিয় ক্যারিয়ার সর্বস্ব ছাত্র সমাজ বোধহয় আড়মোড়া ভাঙছে, এই মোচড় আসলে সমাজের সর্বত্র বিরাজমান এক অস্থিরতার পরোক্ষ প্রভাব। অস্থিরতা পরিস্থিতির আরেকটি পরিবর্তনের লক্ষণ মাত্র। পরিস্থিতি ভালর দিক মোড় নেওয়ার জন্য যারা উদগ্রীব – তাদেরকে সক্রিয় হতেই হবে। অশুভের দাপটে শুভর বিজয় কামনা সাধারণ বুদ্ধিতে ইউটোপিয়ানই মনে হয়, কারণ এই কামনার বাস্তবায়ন জ্ঞান ও কর্মের এক সামগ্রিক জীবনমুখী পরিবর্তনের সাথে যুক্ত।     


No comments:

Post a Comment